প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন কি?
উত্তর: জন্ম নিবন্ধন হলো জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন) এর আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা এবং স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক রেজিস্টারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি প্রদান এবং জন্ম সনদ প্রদান করা।
প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন কি কি কাজে লাগে?
উত্তর: ক) পাসপোর্ট ইস্যু খ) বিবাহ নিবন্ধন গ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ঘ) সরকারী, বেসরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগদান ঙ) ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু চ) ভোটার তালিকা প্রণয়ন ছ) জমি রেজিষ্ট্রেশন জ) ব্যাংক হিসাব খোলা ঝ) আমদানি ও রপ্তানী লাইসেন্স প্রাপ্তি ঞ) গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি ট) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি ঠ) ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তি ড) বাড়ির নক্সা অনুমোদন প্রাপ্তি ঢ) গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তি ন) ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও ত) জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তি।
রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন আবেদন প্রক্রিয়া ?
উত্তর: জন্ম নিবন্ধনের নির্ধারিত আবেদন ফরমে (ছাপানো বা হাতে লিখা হলেও চলবে) নিবন্ধকের নিকট নিম্নে বর্ণিত দলিল বা প্রত্যয়নসহ আবেদন করতে হবে। এছাড়াও br.lgd.gov.bd ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধকের কার্যালয় বরাবর অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের প্রিন্ট কপি নিবন্ধন অফিসে দাখিল করলে নিবন্ধক জন্ম নিবন্ধন করতে পারবেন নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির জন্মের পাঁচ বৎসরের মধ্যে আবেদন করা হলে-
- তথ্য সংগ্রহকারীর প্রত্যয়ন, অথবা
- ইপিআই কার্ডের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা
- সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা
- নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন জন্ম সংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা
- তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন।
নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির জন্মের পাঁচ বৎসর পরে আবেদন করা হলে-
- বয়স প্রমাণের জন্য এমবিবিএস ডাক্তারের এবং জন্মস্থান বা স্থায়ীভাবে বসবাসের স্থান প্রমাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর/সদস্যের প্রত্যয়ন, অথবা
- বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক বা তৎকর্তৃক মনোনীত শিক্ষক বা কর্মকর্তার প্রত্যয়ন, অথবা
- বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য ইপিআই কার্ড বা পাসপোর্ট বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা কোন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্ম সংক্রান্ত ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা
- নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন জন্ম সংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি, অথবা
- তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন।
প্রশ্ন: জন্ম তথ্য প্রদানকারী কারা?
উত্তর: শিশুর পিতা বা মাতা বা অভিভাবক শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের নিকট প্রদানের জন্য দায়ী থাকবেন।
এছাড়া নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ কোন ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করতে পারবেন:
- ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, এবং সচিব;
- গ্রাম পুলিশ;
- সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার কাউন্সিলর;
- ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন অথবা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবার কল্যাণকর্মী;
- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেক্টরে নিয়োজিত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) মাঠকর্মী;
- কোন সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা মাতৃসদন বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে জন্মগ্রহণের ক্ষেত্রে উহার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার অথবা ডাক্তার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা;
- নিবন্ধক কর্তৃক নিয়োজিত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী;
- জেলখানায় জন্মের ক্ষেত্রে জেল সুপার বা জেলার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি;
- পরিত্যক্ত শিশুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা;
নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন: জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কোথায় করবেন ?
উত্তর: ব্যক্তির জন্ম স্থান বা স্থায়ী ঠিকানা বা বর্তমানে বসবাস করছেন এমন যে কোন স্থানের নিবন্ধকের কাছে জন্ম নিবন্ধন করানো যাবে এবং কোন ব্যক্তি যে এলাকায় মৃত্যু বরণ করবেন সে এলাকার নিবন্ধকের কাছে মৃত্যু নিবন্ধন করাতে হবে।জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন:
- ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা সদস্য;
- পৌরসভার মেয়র বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা বা কাউন্সিলর;
- সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা বা কাউন্সিলর;
- ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা; ও
- বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসারগণ চট্টগ্রমা, খুলনা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনসমূহে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনে প্রধান কার্যালয়ে এবং নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি কর্পারেশনে পুরাতন পৌরসভা কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণ জন্ম নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর এলাকা ভিত্তিক ওয়ার্ড ও অঞ্চলের তথ্য দেখতে ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর নামের উপর ক্লিক করুন।